The story of the lion and the baby deer #Story blog post

This is a emotional story of the lion and the baby deer #Story blog post...

 



নীল আকাশ। আকাশের নিচে বিশাল মাঠ। সারা মাঠ জুড় মানুষের গলা সমান ঘাসের ঝৌপ। মাঠের শেষে দূরে বড় বড় গাছ মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে। গাছগুলোর ঘন সবুজ পাতার আড়ালে নানান রঙের পাখির কিচিরমিচির শ্দ। বাতাসে মাঠের ঘাস দোল খায় আর গাছের পাতায় ওঠে সর সর শব্দ। জনমানুষশৃন্য নির্জন মাঠ। মাঠর বুক চিরে তির তির করে বয়ে চলে নদী। দূরে ঘন বন। বনের পশু পাখিরা দল বেঁধে আসে সে নদীর পানি পান করতে। কখনও আসে। গােসল করতে। পানিতে পশুপাখির ঝাঁপাঝাপি ও লুটোপুটির শব্দে নির্জন মাঠ সাড়া জাগে।

সিংহী ও হরিণশিশু গল্প


মাঠ যেখানে শেষ, বনের সেখানে শুর। মাইলের পর মাইল জুড়ে শুধু। বন আর বন। বনের বিশাল এলাকায় চিতা, সিংহ, বনগরু, মহিষ, হাতি, হরিণ, জেব্রা, জিরাফ, নেকড়ে, হায়না ইত্যাদি পশুরা দল বেঁধে বাস করে। গাছের ডালে ডালে ঝাঁক বেঁধে পাখিদের বাস। নানান জাতের ও স্বাদের ফল, ফুল, পাতা- বানর আর পাখিদের খাবার জোগায়। রাতের অন্ধ্কারে পশুরা দল বেঁধে গভীর বনে আশ্রয় নেয়। দিনের আলাে ফুটলে বন থেকে বেরিয়ে আসে খাবারের নেয়। দিনের আলাে ফুটলে বন। খৌজে। বনগরু, হরিণ, মহিষ, জেব্রা, জিরাফ, হাতি মাঠে এসে ঘাস খায়। পিপাসা পেলে নদীতে গিয়ে পানি পান করে। চিতা, সিংহ,

থেকে বেরিয়ে। আসে খাবারের বাচে। তারাও মাঠে চলে আসে ঘাস খাওয়া পশগুলাের মতাে। মাঠে ঘাস খাওয়া পশুগুলাের মাংসই তাদের প্রিয় খাবার।


পশুরা তাে দল বেঁধে থাকে। ৭-৮টি সিংহ মিলে এমনি একটি দল। সেই দলে ছিল এক সিংহী। সিংহীর বয়স বেশি হওয়ায় তাকে দল। থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তার আর এখন আগের মতাে শরীরে।

শক্তি নেই। ছুটে ছুটে পশ শিকার বকরতে পারে না। একা একা ঘুরে বেড়ায়। কাছেপিঠে ছােটখাট পশু পেলে ধরে খায়। কোন বন্ধু নেই- সাথী নেই। ইচ্ছে হলে ঘােরে, অথবা নির্জন গাছের ছায়ায় একা একা মধ্যে অসংথ্য বনগরু, মহিষ, হরিণ, জেব্রা চরে বেড়ায়। ঘাসের ঝোপ থেকে চঞ্চল পশুদের ঘাস খাওয়ার ক্ষীণ শব্দ ভেসে আসে। সিংহী কথনও কখনও একদূষ্টে তাকিয়ে থাকে ওদের দিক। মনে পড়ে যায় অতীত দিনের শিকারের কথা। এমনি করেই তার দিন যায়, রাত আসে।

সিংহী ও হরিণশিশু গল্প


এমনি একদিন একাকী সিংহী এক গাছের তলায় শুয়ে আছে। ভাের হয়েছে অনেক আগে। ঘাসের ডগায়, গাছের পাতায় বিন্দু বিন্দু শিশির জমে আছে। তার ওপর সুর্যের আলোে পড়ে ঝিকমিক করছে। ভারি সুন্দর মিষ্ট নির্জন সকাল। একদল হরিণ ঘাস থেতে থেতে ওই সময় সিংহীর খুব কাছে চলে আসে। ঝোপের আড়াল থাকায় হরিণের দল সিংহীকে দেখতে পায়নি এত কাছে শিকার ধরার সুযোগ পেয়ে সিংহী ওত পেতে থাকে। সময়।

বুঝেই ঝাঁপিয়ে পড়ে হরিণের ঝাঁকের ওপর। হরিণ খুব সাবধানী প্রাণী। ছুটতেও পারে খুব জোরে। সিংহীর ওই হিং্স্র চেহারা আর বাঁপিয়ে পড়ার দৃশ্য মুহুর্তেই তারা দেখে ফেলে। প্রাণপণে দৌড় দেয়।

হরিণের দল। নিমেষেই নির্জন মাঠ যেন জেগে ওঠে। ছুটন্ত হরিণের খুরের শব্দ ছড়িয়ে পড়ে চারদিক। হরিণগুলো ছুটছে তাে ছুটছেই ।

সিংহী ও হরিণশিশু গল্প


পেছনে পেছনে সব শক্তি দিয়ে তাড়া করছে সিংহী। হরিণের গতির সঙ্গে পেরে ওঠার শক্তি তাে এখন আর তার নেই। ছুটে চলার সময় হঠাৎ একটা হরিণশিশু হাঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়। প্রাণপণে সে চেষ্টা করে উঠতে, কিন্তু পারে না। সিংহীর নাগালের বাইরে গিয়ে নিরাপদ জায়গায় থেমে যায় হরিণের দল। মা হরিণ একটু এগিয়ে গিয়ে গলা উচু করে অসহায়ভাবে তাকিয়ে থাকে। চোথে তার ভয়। একটু এগিয়ে যায় বাঙার দিকে, আবার পিডছিয়ে আসে ভয়ংকর সিংহীকে দেখে।

 অসহায় হরিণের দল ধীরে ধীরে বনের দিকে এগিয়ে যায়। অস্থির মা হরিণের পা বুঝি আর চলে না। তবুও মাথাটা নিচু করে আস্তে আস্তে ইাঁটতে থাকে। আধবােজা আস্তে হাটতে থাকে। আধবোজা চোখ দুটো জলে ছলছল করে। বুকে তার সন্তান হারানাে মায়ের কষ্টের ভার। চোখ দুটো জলে ছলছল করে।

সিংহী ও হরিণশিশু গল্প


এদিকে মাটিতে পড়ে থাকা হরিণশিশুর কাছে এসে থেমে যায় সিংহী। শিকারের ওপর ঝাঁপিয় পড়ে না। কাছে গিয়ে শুঁকে শুঁকে দেখে। একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে হরিণশিশুটির দিকে। শিশুটি উঠে দঁড়াতে

চেষ্টা করে, কিন্তু পারে না। অবশেষে শুয়ে পড়ে। বেশ সময় বয়ে যায়। সিংহী হরিণশিশুর পাশে এসে বসে। আস্তে

আস্তে শিশুটির সারা শরীর চেটে চেটে আদর করে দেয়। শিশুটিরও যেন কোনো ভয় নেই। দেখে মনে হয়, যেন জন্মের পর থেকেই সে সিংহীর কাছে আছে। মায়ের বুকের মাঝে সে যেমন করে শুয়ে থাকতাে, তেমনি করে সিংহীর বুকে মাথা গুঁজে ঘুমিয়ে পড়। সারা রাত সিংহী হরিণশিশুটিকে বুকে নিয়ে জেগে থাকে।

সিংহী ও হরিণশিশু গল্প


রাত পােহায়। পুব আকাশের আলাে নির্জন, শান্ত মাঠ আর বনের ওপর ছড়িয়ে পড়ে। হরিণশিশু ঘুম থেকে জেগে ওঠে। আড়ুমােড়া ভেঙে দাঁড়াতে চেষ্টা করে। সিংহী শান্তভাবে তাকিয়ে দেখে। শিশুর

পা, গলা, ঘাড়, পিঠ আদর করে চেটে দেয়। শিশুটি দাঁড়িয় ধীরে ধীরে হাটত থাকে। সিংহী হরিণশিশুর পাশে গা ঘেষে ঘেঁষে হাঁটে। ইাটতে হাটতে নদীর পাড়ে যায়। দুজনে পানি খেয়ে আবার ইাটতে

থাকে। বেশ কিছু দুর গিয়ে একটা গাছের তলায় বসে। আশেপাশে কচি কচি ঘাস। হরিণশিশুটির খিদে পেয়েছে। বেশির ভাগ সময় তার মায়ের দুধ খেয়েই পট ভরত। কথনও কখনও ঘাস চিবিয়ে খেত, কিন্তু মায়ের দুধের মতাে এত ভালাে লাগত না।

সিংহী ও হরিণশিশু গল্প

তাে আর কোনোা উপায় নেই। ঘাস খয়েই পেট ভরাতে হবে। শিশুটি ঘুরে ঘুরে ঘাস খায়। সিংহী তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে আর সতর্ক দৃষ্টিতে পাহারা দেয়। বলা তাে যায় না, কথন আবার বিপদ এসে পড়ে। এমনি করেই তাদের দিন কাটে। সিংহী শিশুটিকে আদর করে, সােহাগ করে আর রাতে বুকের মধ্য নিয়ে ঘুমায়। সর্বক্ষণ

তাকে আগলে রাখে। একদিন পড়ন্ত বিকেলে বনের মধ্য দুজনে হাটতে হাঁটতেত যাচ্ছে। সরু পথ, দুপাশে ঝোপঝাড়। সামনে হরিণশিশুটি, পেছনে পেছনে সিংহী। সিংহী। দেখে মনে হয় সিংহী যেন খুব ক্লান্ত। হঠাৎ ঝোপের আড়াল থেকে বিশাল এক সিংহ ঝাঁপিয়ে পড়ে হরিণশিশুটির ওপর।


সিংহী ও হরিণশিশু গল্প


শিশুটি পালানাে তাে দৃরের কথা, শব্দ করারও কোনো সুযোেগ পায়। না। সিংহ হরিণশিশুর ঘাড় কামড়ে ধরে নিয়ে যেতে থাকে। পেছন। থেকে ছুটে গিয়ে সিংহী সামনে দাঁড়ায়। সিংহ গর গর শব্দ করে তাড়া দেয় সিংহীকে। সিংহী ছুটে একবার সামনে যায়, আবার পেছনে আসে। কিন্তু বিশাল আকারের শক্তিমান সিংহের সে কিছুই করতে পারে না। প্রাণহীন নেতিয়ে পড়া শিশুটিকে নিয়ে একটা গাছের তলায়। বসে সিংহটি। সামনের দুটি পা ছড়িয়ে কেশর ফুলিয়ে গর গর শব্দ

করছে। আর তার মুখের সামনে প্রাণশূন্য মৃত হরিণশিশুটি। সিংহের শাদা ধারালো দাঁতগুলাে চিক চিক করছে। সিংহী একবার সামনে যায় আবার পিছিয়ে আসে।

সিংহী ও হরিণশিশু গল্প


সিংহটির চারদিকে ঘুরছে আর ছটফট করছে হরিণশিশুটিকে ছিনিয়ে আনতে। বিন্তু বয়সের ভারে শক্তিহীন সিংহীর আর আগের তেজ নেই। নিজ সন্তানের চেয়ে প্রিয় হরিণশিশুটির জন্য সে যেন আরাে

বেপরােয়া হয়ে ওঠে। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে সে ঝাঁপিয়ে পড়ে সিংহের ওপর। সিংহের শক্তির সজ্গে সে পারবে কেমন করে! এ সময় সে আহত হয়ে মাটিতে পড় যায়। তবুও শেষবারের মতাে সে আকাশ কাঁপিয়ে গর্জন করে উঠতে চায়। কিন্তু গলা দিয়ে তার আর কোনাে গর্জন বের হয় না। শুধু কান্নার মতো এক করুণ শব্দ বাতাসে মিলিয়ে যায়। তখন রাত নেমেছে। অন্ধ্কার রাত যেন নিঃশব্দে ঢেকে দিয়েছে সারা মাঠ।

সিংহী ও হরিণশিশু গল্প





গল্পটি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর,ঢাকা এর প্রকাশিত একটি বই থেকে নেওয়া হয়েছে
Hi, I'm the owner of this site. I share different types of learning books, files, blogs, tutorials and much more on this website.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Let me know how can I help you?